ভূমিকাঃ
স্কোয়াশ একটি সুস্বাদু ও জনপ্রিয় সব্জি হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে পরিচিত। বাংলাদেশে এটি একটি উচ্চমূল্যের ফসল। বিগত কয়েক বছর ধরে এটি আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষাবাদের প্রচেষ্টা চলছে। এবং তুলনামূলকভাবে কম উর্বর জমি প্রয়োজন হওয়াতে চরাঞ্চলে স্কোয়াশের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি কুমড়া পরিবারেরই সব্জি। এর বাহারি আকার এবং রঙ সকলের আকর্ষণ সৃষ্টি করে। স্কোয়াশ হৃদরোগ, চোখের বিভিন্ন রোগ, ডায়াবেটিস, এবং ত্বকের নানাবিধ সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। এত উপকারী হওয়ার ফলে ধীরে ধীরে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বাণিজ্যিকভাবে স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।
চাষ পদ্ধতিঃ
স্কোয়াশ চাষের জন্য উষ্ণ, প্রচুর সূর্যালোক এবং নিন্ম আর্দ্রতা সবচেয়ে উত্তম। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ বা এঁটেল দোআঁশ মাটি চাষাবাদের জন্য উত্তম তবে চরাঞ্চলের পলিমাটিতে এর ফলন ভালো হয়। স্কোয়াশ চাষের জন্য ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি উপযোগী। তাপমাত্রায় বৃদ্ধি এবং দিন বড় হওয়ার সাথে সাথে নারী ফুলের তুলনায় পুরুষ ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে বীজ বপন করার জন্য ভালো। নার্সারিতে চারা পলিব্যাগে উৎপাদন করে নিলে ভালো হয়। ব্যাগের আকার ১০ সেন্টিমিটার করে নিতে হবে। প্রথমে অর্ধেক মাটি ও অর্ধেক গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করে পলিব্যাগে নিতে হবে। সহজ অঙ্কুরোদগমের জন্য পরিষ্কার পানিতে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রেখে তারপর পলিব্যাগে বপন করতে হবে। প্রতি ব্যাগে দুটি করে বীজ বপন করতে হবে। বীজ সরাসরি মাদায়ও বপন করা হয়। সেক্ষেত্রে সার প্রয়োগ ও মাদা তৈরির ৫ দিন পর প্রতি মাদায় ২ থেকে ৩টি করে বীজ বপন করতে হবে। চারা গজানোর ১০ দিন পর ১টি সুস্থ ও সবল চারা রেখে বাকিগুলো উঠিয়ে ফেলে দিতে হবে। চারার বয়স ১৫ দিন হলে তা জমিতে প্রস্তুত মাদায় রোপণ করতে হবে। পাশাপাশি দুইটি বেডের মাঝখানে ৭০ সেমি. প্রশস্ত সেচ ও নিকাশ নালা থাকতে হবে। ভালো ফলন পেতে মাটিতে প্রয়োজন অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। গোবর সার, ফসফরাস সার ও পটাশ সারের ৩ ভাগের দুইভাগ শেষবার জমি প্রস্তুতের সময় জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে। অবশিষ্ট এক ভাগ পটাশ সার বীজ বপনের ৩০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। তবে নাইট্রোজেন সার তিনটি সমান ভাগে ভাগ করে বীজ বপনের ২৫, ৪০ ও ৬০ দিন পর পর প্রয়োগ করতে হবে। স্কোয়াস পানির প্রতি খুবই সংবেদনশীল হওয়ার কারণে অতিরিক্ত পানি সরবরাহ করা যাবে না। সেচ নালা দিয়ে প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অতিরিক্ত সেচ দেওয়া বা জমি পানি দিয়ে একেবারে ভিজিয়ে ফেলা থেকে একেবারে বিরত থাকতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে ৫ ৭ দিন অন্তর সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেক বার সেচের পর হালকা খড়ের প্রয়োগ করে গাছের গোড়ার মাটির চাকা ভেঙে দিতে হবে। এছাড়াও আগাছা থাকলে গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান শোষণ করে নেয়। তাই চারা লাগানো থেকে শুরু করে ফল সংগ্রহের পূর্ব পর্যন্ত জমিকে সবসময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের সময়ে রাতের বেলা তাপমাত্রা কমে যায়। যা স্কোয়াশ গাছের স্বাভাবিক ব্রিদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে। তাই গাছের এবং ফলের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য পলিথিন দিয়ে ছাউনি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের হাত থেকে গাছকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। স্কোয়াশের গায়ের রঙ সবুজ, মসৃণ ও উজ্জ্বল খোলস হলে বুঝতে হবে এটি সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত।
আয়ঃ
আমাদের দেশের জন্য স্কোয়াশ সম্পূর্ণ নতুন একটি ফসল। দিনে দিনে যার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন অবস্থাতে এর বাজারমূল্য বেশি হওয়াতে স্কোয়াশের চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।
শুভ কামনা রইল।
English version.
Squash Cultivation
Introduction:
Squash is known as a delicious and popular vegetable to people of different countries of the world. It is a high value crop in Bangladesh. For the past few years it is being cultivated in various regions of our country. And since relatively less fertile land is required, squash cultivation is increasing in grasslands. It is a vegetable of the pumpkin family. Its exotic shape and color attract everyone. Squash helps in heart disease, various eye diseases, diabetes, and various skin problems. Being so useful, its demand is gradually increasing. So it is possible to profit by growing squash commercially.
Cultivation method:
Warm, lots of sunlight and low humidity are best for growing squash. Organically rich loam or clay loam soils are good for cultivation but yield better in pasture alluvial soils. A temperature of 20 to 25 degrees Celsius is more suitable for squash cultivation. As temperature increases and days increase, the number of male flowers increases compared to female flowers. October to December is good for sowing. It is better to produce seedlings in polybags in the nursery. The size of the bag should be 10 cm. First mix half soil and half dung to prepare the soil and take it in a polybag. For easy germination, seeds should be soaked in clean water for 18 to 20 hours and then sown in polybags. Two seeds should be sown in each bag. The seeds are also sown directly on the mat. In that case, 2 to 3 seeds should be sown in each pad after 5 days of fertilizer application and pad making. After 10 days of seedling growth, 1 healthy and strong seedling should be kept and the rest should be removed. When the seedling is 15 days old, it should be planted in prepared soil. 70 cm between the two beds as well. There should be ample irrigation and drainage channels. Fertilizers should be applied to the soil as needed to get good yield. Two thirds of dung manure, phosphorus fertilizer and potash fertilizer should be mixed in the land during the last land preparation. Remaining one part potash fertilizer should be applied after 30 days of sowing. However, nitrogen fertilizer should be divided into three equal parts and applied after 25, 40 and 60 days after sowing. Squashes are very sensitive to water and should not be overwatered. Regular irrigation should be provided as per requirement through irrigation canals. Over-irrigation or over-wetting the land with water should be absolutely avoided. Irrigation should be done every 5-7 days during dry season. After each irrigation, light straw should be applied to break up the soil clods at the base of the plant. Also, if there are weeds, they absorb the necessary nutrients of the plant. So the land should always be kept weed free from planting till harvesting. During the months of November to January, the temperature drops at night. Which inhibits the normal growth of the squash plant. So for normal growth of plants and fruits should be covered with polythene. Necessary measures should be taken to protect the tree from diseases and insects. A squash is ready to harvest if its skin is green, smooth and shiny.
Income:
Squash is a completely new crop for our country. The demand of which is increasing day by day. In such a situation, it is possible to make more profit by cultivating squash as its market price is high.
Best wishes.