Quail Birds / কোয়েল পাখীর ব্যবসাঃ

কোয়েল একটি পাখি জাতীয় গোত্রের প্রানী। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই পালন করা হয় এই পাখি। কোয়েলের মাংস খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে সর্বত্রই পরিচিত। ৯০ দশকের গোড়ার দিকে এটি ভারত থেকে বাংলাদেশে আনা হয়। এই পাখি থেকে ভালো ফল পেতে হলে কোয়েলের বাচ্চা তিন মাস পর্যন্ত খুবই যত্ন সহকারে বড় করতে হবে। বাংলাদেশে গরমের সময় প্রায় দুই সপ্তাহ এবং শীতের সময় তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত পাখিকে কৃত্রিম তাপ দিতে হয়। এতে বাচ্চা পাখির মৃত্যুহারও অনেক কম হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়া এ পাখি পালনের সম্পূর্ণ উপযোগী। এটি পালন করা খুবই সহজ, দাম বেশি ও লাভজনক। কবুতরের মতো এ পাখিকে শখ করে কিংবা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পালন করা যায়। 

কোয়েল পালনের সুবিধাঃ

  • কোয়েল পালন করতে অল্প পুঁজি লাগে কিন্তু লাভ বেশি হয়।
  • কোয়েল পাখি আকৃতিতে ছোট বলে পালন করতে জায়গা কম লাগে। খাঁচায় পালন করা যায়। একটি মুরগির পরিবর্তে ছয় থেকে সাতটি কোয়েল পাখি পালন করা যায়।
  • কোয়েল পালনে উৎপাদন খরচ খুব কম লাগে, বাজারে চাহিদা এবং দাম বেশি পাওয়া যায়। এক জোড়া কোয়েলের বাচ্চার দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
  • খুব দ্রুত বড় হয়। ২৫ থেকে ২৬ দিন বয়সের কোয়েল খাওয়ার উপযোগী হয় এবং ওজন হয় ১৫০ থেকে ১৮০ গ্রাম।
  • এটি পালন করা খুবই সহজ, যে কেও পালন করতে পারেন। ছয় থেকে আট সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। একটি ডিমের ওজন আট থেকে ১২ গ্রাম।

কোয়েল পাখির জাতঃ


সারা পৃথিবীতে কোয়েলের ১৬টি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে দুটি প্রজাতি বাংলাদেশে দেখা যায়। তার একটি জাপানিজ, আরেকটি হলো বব হোয়াইট কোয়েল (মাংস উৎপাদনকারী)। ডিম উৎপাদনকারী কোয়েলের মধ্যে ভালো জাতের আছে ফারাও, ব্রিটিশ রেঞ্জ, ইংলিশ হোয়াইট, ম্যানচুরিয়াল গোল্ডেন, বব হোয়াইট (আমেরিকা), হোয়াইট বেস্ট কোয়েল (ইন্ডিয়ান) ইত্যাদি। এসব জাতের কোয়েল বাংলাদেশে পালন করা হচ্ছে। 

বাসস্থানঃ


কোয়েল পাখি মেঝে ও খাঁচায় উভয়ভাবেই রেখে পালন করা যায়। প্রতিটি কোয়েলের জন্য খাঁচায় ১৫০ বর্গ সেন্টিমিটার পরিমাণ জায়গা রাখতে হয়। কোয়েলের ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের প্রয়োজন হয়। সাধারণত দৈর্ঘ্য ১২০ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৬০ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ২৫ সেন্টিমিটার একটি খাঁচায় ৫০টি কোয়েল পাখি পালন করা যায়। প্লাস্টিকের খাঁচায় এটি পালন করা সহজ। কোয়েলের খাঁচায় খাদ্য ও পানির পাত্র থাকতে হবে। আমাদের দেশে সাধারণত তুষ, বালি, ছাই, কাঠের গুঁড়া এসব দিয়ে কোয়েলের মেঝের লিটার তৈরি করা হয়। মাঝে মাঝে অবস্থা দেখে কোয়েলের এ লিটার পরিবর্তন করতে হবে, যাতে কোনোভাবেই পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর না হয়। প্রথমেই পাঁচ থেকে ছয় ইঞ্চি পুরু তুষ বিছিয়ে লিটার তৈরি করতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যেন লিটার ভেজা না হয়।

কোয়েলের খাদ্যঃ


কোয়েল পাখির খাবার হলো গম ভাঙা, ভুট্টা, চালের কুঁড়া, শুকনো মাছের গুঁড়া, তিলের খৈল, সয়াবিনের খৈল, ঝিনুকের গুঁড়া ও লবণ। চার সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধির জন্য ২৭ ক্রড প্রোটিন এবং ২ হাজার ৮০০ কিলোক্যালোরি/ কেজি শক্তি দিতে হবে। কোয়েল কে শুষ্ক গুঁড়া/ম্যাশ ফিড প্রদান করতে হবে। চার সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিটি কোয়েল দিনে চার গ্রাম করে খাদ্য খায়। পঞ্চম সপ্তাহ বয়স থেকে দৈনিক প্রতিটি কোয়েল ২০ থেকে ২৫ গ্রাম খাদ্য খায়। একটি কোয়েলের বছরে খাদ্য লাগে আট কেজি।

স্বাস্থ্যসেবাঃ


খাবারের সঙ্গে সব সময় ০.২৫ ভাগ ভিটামিন মিনারেল প্রিমিঙ্ জিএস এবং ডিম পাড়াকালে ভিটামিন মিনারেল প্রিমিঙ্ এল দিতে হবে। প্রতি ১০০ কেজি খাবারে ২০০ মিলিমিটার করে প্রোপিয়নিক এসিড মেশাতে হবে। গরমের সময় প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম করে স্যালাইন এবং বেশি বৃষ্টির সময়ে প্রতি লিটার পানিতে এক গ্রাম করে কসুমিঙ্ প্লাস দিতে হবে। 

ডিম বাচ্চা উৎপাদনঃ


ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে হলে তিনটি স্ত্রী কোয়েলের সঙ্গে একটি পুরুষ কোয়েলকে প্রজননের জন্য রাখতে হবে। কোয়েল কখনও কুঁচে হয় না বলে মুরগির নিচে বা ইনকিউবেটরে কোয়েলের ডিম ফোটাতে হয়। ১৬ থেকে ১৮ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চা ফোটানো ও ডিম উৎপাদনের জন্য কোয়েলের ঘরে ১৬ ঘণ্টা আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। পূর্ণবয়স্ক কোয়েলের থেকে বেশি ডিম পেতে হলে পঞ্চম সপ্তাহ বয়সে ১২ ঘণ্টা, ষষ্ঠ সপ্তাহে ১৩ ঘণ্টা, সপ্তম সপ্তাহে ১৪ ঘণ্টা, অষ্টম সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা ও নবম সপ্তাহে ১৬ ঘণ্টা আলো দিতে হবে। তবে যতক্ষণ দিনের আলো থাকবে কৃত্রিম আলো ততক্ষণ দিতে হবে না। কৃত্রিম আলোর জন্য ১০০ বর্গফুট জায়গায় ৬০ ওয়াটের একটি বাল্ব যথেষ্ট।

রোগ বালাইঃ


কোয়েলের রোগবালাই খুবই কম হয় । তবে কোয়েলের রক্ত আমাশয় হতে পারে। কোয়েলের রানীক্ষেত ও রক্ত আমাশয় প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আছে। কিন্তু এরা ছত্রাকের প্রতি সংবেদনশীল। প্রতি ১০০ কেজি খাদ্যে ২০০ মিলিমিটার প্রোপিয়নিক এসিড মিশ্রিত করলে এ ছত্রাক দ্বারা খাদ্য আর সংক্রমিত হয় না।

শুভ কামনা রইল।

English Version:

Quail Birds:

The Quail bird is a bird species. This bird is observed in almost every country of the world. Quail meat is widely known as a delicious and nutritious food. It was brought from India to Bangladesh in the early nineties. In order to get good results from this bird, the baby in the quail needs to be very carefully raised for up to three months. In Bangladesh, about two weeks in the summer and three to four weeks in winter, the birds have to provide artificial heat. It will also reduce the mortality rate of baby birds. The weather in Bangladesh is perfectly suited for the rearing of birds. It is very easy to observe, the cost is high and profitable. Like a pigeon, this bird can be raised on a hobby or commercial basis.

Quail rearing facilities:

• It takes a small amount of capital to sustain the quill but the profits are high.

• The quail is smaller in size and less space to observe. Can be observed in the cage. Six to seven quail birds can be raised instead of one chicken.

• Production cost of quail is very low, demand and prices are high in the market. One pair of quail baby price is near about 80 to 100 Taka.

• Grows up very fast. The quail is suitable for eating between the ages of 25 and 26 days and weight from 150 to 180 grams.

• It is very easy to observe, anyone can do. Eggs begin laying at the age of six to eight weeks. An egg weight is 8 to 12 grams.

Quail bird breeds:

There are 16 species of quail throughout the world. Two of these species are found in Bangladesh. One is Japanese and other one is Bob White Quail (meat grower). Egg-producing quail has good varieties such as Farrow, British Range, English White, Manchurian Golden, Bob White (USA), White Best Quail (Indian). These varieties are being observed in Bangladesh.

Residence:

Quail birds can be observed both on the floor and in the cage. For each quill, the cage should be kept in a cage of 150 sq. Cm. Quail room requires sufficient light and air. Typically 50 quail birds can be reared in a cage of 120 cm in length, 60 cm in width and 25 cm in height. It is easy to observe in a plastic cage. Quail cages should contain food and water containers. In our country, quill floor litter is usually made of chaff, sand, ash, wood powder. Occasionally, a liter of quail needs to be changed so that the environment is not unhealthy. First, make a litter with five to six inches of thick snow and make sure the litter is not wet.

Quail food:

The food of quail birds is wheat crackers, maize, rice bran, dried fish powder, sesame oil, soybean oil, oyster powder and salt. Up to four weeks of age, 27 crude protein and 2,800 kilocalories / kg of energy will be provided for the desired growth. Quail should be provided with dry powder / mash feed. For up to four weeks, each quail eats four grams a day. From the age of five weeks, each quail consumes 20 to 25 grams of food daily. In a quail year, the food consumes eight kilograms.

Healthcare:

At all times, 0.25% of Vitamin Mineral Preming GS and Vitamin Mineral Priming L should be given while laying eggs. Propionic acid should be mixed with 200 milliliters per 100 kg diet. During the summer, two grams of saline per liter of water and one gram per liter of water in excess of rain should be given cosuming plus.

Egg and baby production:

In order to hatch an egg, a male quail with three wives will be kept for breeding. Under the chicken or in the incubator, quail eggs are hatched because the quail is never crushed. The eggs hatch in 16 to 18 days. The quail should be kept in the room for 16 hours to hatch and produce eggs. To get more eggs than adult quail, 12 hours at the age of five weeks, 13 hours in the sixth week, 14 hours in the seventh week, 15 hours in the eighth week and 16 hours in the ninth week. However, artificial light should not be given as long as there is daylight. A 60-watt bulb in a 100 square foot is sufficient for artificial light.

Disease:

Quail disease is very rare. However, the blood dysentery of the quail can be staggering. Quail has the ability to withstand queen blood and blood dysentery. But they are sensitive to fungi. By mixing 200 milliliters of propionic acid per 100 kg of food, the food is no longer infected by this fungus.

Best of luck