Dragon Fruit Farming/ ড্রাগন ফলের চাষ

ড্রাগন ফলের গাছ দক্ষিন আমেরিকার জঙ্গলে জন্মানো লতানো এক ধরনের ক্যাকটাস জাতীয় গাছ। এই গাছের কোন পাতা হয় না। মালইয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, চীন ও ভারত এ প্রচুর পরিমানে চাষ হলেও আমাদের বাংলাদেশে দিন দিন এর চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ড্রাগন ফলের গাছ সাধারনত ১.৫ মিটার থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।

ড্রাগন ফল সাধারনত ৩ প্রকারের হয়ে থাকে।

লাল ড্রাগন ফল- এর খোসার রঙ লাল ও শাঁস সাদা। এই প্রজাতির ফলই বেশি দেখতে পাওয়া যায়।

কোস্টারিকা ড্রাগন ফল- এর খোসা ও শাঁস উভয়ের রঙই লাল।

হলুদ রঙের ড্রাগন ফল- এই জাতের ড্রাগন ফলের খোসা হলুদ রঙের ও শাঁসের রঙ সাদা।

বাংলাদেশে উদ্ভাবিত জাত গুলো হল – বারি ড্রাগন -১, বাউ ড্রাগন ফল-১, বাউ ড্রাগন ফল-২

পুষ্টিগুন ও উপকারিতাঃ  

প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে ৮০ থেকে ৯০ গ্রাম পানি, শর্করা ৯ থেকে ১০ গ্রাম, ফসফরাস ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম, প্রোটিন ০.১৫ থেকে .৫০ গ্রাম এছাড়া স্বল্প পরিমানে আঁশ, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই এবং আয়রন পাওয়া যায়।

ড্রাগন ফল খেলে চোখ ভালো থাকে, শরীরের চর্বি কমায়, হাড় শক্ত করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, কোলেস্টেরল কমায়, দাত ও চুল শক্ত করে।  

জমি তৈরি ও রোপনঃ

ড্রাগন গাছ প্রচুর আলোতে ভালো জন্মে। ড্রাগন গাছের প্রধান সমস্যা হলো এটা পানিতে পচে যায়। তাই জমিটি নির্বাচন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন জমি টা কিছুটা উঁচু হয়, প্রচুর আলো পাওয়া যায় এবং পানি নিষ্কাশন ব্যাবস্থা ভালো থাকে। বাংলাদেশে যে কোন সময়েই ড্রাগন চারা লাগানো যায় তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর এর মধ্যে লাগানো উত্তম। প্রথমে জমি ভালো ভাবে চাষ করে ৩ মিটার পর পর গর্ত করতে হয়। ১.৫ মিটার x ১.৫ মিটার x ১ মিটার আকারের গর্ত করে সেই গর্তে জৈব সার দিতে হবে। জৈব সার হিসেবে পুরাতন পচা গোবর ২০ থেকে ৩০ কেজি দিতে হয়। গর্ত ভরাটের ১০-১৫ দিন পর প্রতি গর্তে ৪ টি করে চারা সোজাভাবে মাঝখানে লাগাতে হবে। ড্রাগন গাছের চারা বা কার্টিং রোপন করতে হয়। বীজ থেকেও চারা করা যায়। তবে কার্টিং থেকে চারা করলে ফল তারাতারি ধরে এবং ফলন ও ভালো হয়। সিমেন্ট বা বাঁশ এর খুঁটি দিয়ে গাছ কে বেধে দিতে হয়। এই গাছ সাধারানত ২৫ থেকে ৩০ বছর ফলন ভালো দেয়, তাই সিমেন্ট এর খুঁটি ব্যবহার করাই উত্তম। চারা কিছুটা বড় হলে খড়ের বা নারিকেলের রশি দিয়ে বেধে দিতে হবে যাতে কাণ্ড বের হলে খুঁটিকে আঁকড়ে ধরে গাছ সহজেই বাড়তে পারে। প্রতিটি খুঁটির মাথাই একটি করে মটর সাইকেলের পুরাতন টায়ার মোটা তারের সাহায্যে আটকিয়ে দিতে হবে। তারপর গাছের মাথা ও অন্যন্য ডগা টায়ারের ভিতর দিতে বাইরের দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে। এভাবে ঝুলন্ত ডগাতেই ফল বেশি ধরে। ১৫ দিন পরপর হালকা সেচ দিতে হবে।

ফলনঃ

ড্রাগন গাছে ফল সাধারনত ১ বছর থেকে ১.৫ বছর পর থেকে ধরে। গাছে ফুল ফোঁটার মাত্র ৩৫-৪০ দিনের মধ্যেই ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়। প্রতি বছর এর ফলন উল্লেখ্য ভাবে বৃদ্ধি পায়। গাছের বয়স যত বেশি হবে ফলন ও ততো বেশি হয়। বছর বছর এর ফলন ৩ থেকে ৪ গুন বৃদ্ধি পায়। সাধারনত বছরে হেক্টর প্রতি ২০ থেকে ২৫ টন ফলন পাওয়া যায়। শীত কালে আলো কম থাকায় ফলন খুবই কম হয়। কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করতে পারলে শীত কালেও ভালো ফলন পাওয়া যায়।

রোগ বালাই ও প্রতিকারঃ

 মূলপচা- গাছের গোঁড়ায় পানি জমে গেলে গাছের মূলে পচন ধরে। কিছুদিন পর পুরা গাছেই পচন ধরে যায় ফলে গাছ মারা যায়। তাই জমিটি নির্বাচন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন জমি টা কিছুটা উঁচু হয়, প্রচুর আলো পাওয়া যায় এবং পানি নিষ্কাশন ব্যাবস্থা ভালো থাকে।

কাণ্ড ও গোঁড়া পচা রোগ- ছত্রাক অথবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এ রোগ হয়। গাছের কাণ্ড প্রথমে হলুদ রং এবং পরে কালো রং ধারণ করে এবং পরবর্তীতে ঐ অংশে পঁচন শুরু হয় এবং পঁচার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এ রোগ দমনের জন্য যে কোন ছত্রাকনাশক (বেভিস্টিন, রিডোমিল, থিওভিট ইত্যাদি) ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ করে সহজেই সমাধান করা যায়।

পোকা মাকড় এর আক্রমন – এই গাছে তেমন পোকা মাকড় এর আক্রমন দেখা যায় না। তবে মাজে মাজে মাকড়, এফিড এর আক্রমন দেখা যায়। জৈব নাশক ব্যবহার করে এর প্রতিকার করা যায়।

আয়ঃ

আমাদের বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের ব্যপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফলের পাইকারি মূল্য ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পাওয়া যায়। এর মূল্য ফলের সাইজ এর উপর ডিপেন্ড করে।

আপনি চাইলে ছাদ বাগানেও সল্প পরিসরে ড্রাগন ফলের চাষ করতে পারেন।

আল্লাহ আপনার সহায় হোন। 

English Version

Dragon fruit tree is a type of cactus that grows in the forests of South America. This tree has no leaves. Although it is widely cultivated in Malaysia, Thailand, Philippines, China and India, its cultivation is increasing day by day in our Bangladesh. Dragon fruit trees are usually 1.5 meter to 2.5 meter tall. There are usually 3 types of dragon fruit. The skin of the red dragon fruit is red and the shell is white. The fruits of this species are more common. Costa Rican dragon fruit is red in color. Yellow Dragon Fruit- The peel of this species of dragon fruit is yellow in color and the shell is white in color. The varieties invented in Bangladesh are – Barry Dragon-1, Bau Dragon Fruit-1, Bau Dragon Fruit-2.
Nutrition and benefits:
Each 100 grams of dragon fruit contains 80 to 90 grams of water, 9 to 10 grams of sugar, 35 to 40 grams of phosphorus, 0.15 to .50 grams of protein and a small amount of fiber, fat, calcium, vitamin A and vitamin E and iron. Eating dragon fruit is good for eyes, reduces body fat, strengthens bones, increases digestion, lowers cholesterol, strengthens teeth and hair.

Land preparation and planting:
Dragon trees grow well in plenty of light. The main problem with dragon trees is that they rot in water. Therefore, while selecting the land, care should be taken that the land is slightly elevated, plenty of light is available and the drainage system is good. Dragon saplings can be planted at any time in Bangladesh but it is better to plant between April to September. First the land has to be cultivated well and holes have to be dug after 3 meters. Make a hole of 1.5 m x 1.5 m x 1 m and apply organic manure in that hole. 20 to 30 kg of old rotten dung has to be given as organic fertilizer. After 10-15 days of filling the hole, 4 seedlings should be planted in each hole directly in the middle. Dragon saplings or carting are to be planted. Seedlings can also be made from seeds. However, if the seedlings are planted from carting, the fruits are caught quickly and the yield is good. The tree has to be tied with cement or bamboo poles. This tree usually gives good yield for 25 to 30 years, so it is better to use cement poles. When the seedlings are a bit big, they should be tied with straw or coconut rope so that when the stems come out, the tree can grow easily by grabbing the poles. The head of each pole has to be attached to the old tire of the motorcycle with a thick wire. Then the head of the tree and the other end should be hung on the outside to give the tire inside. In this way the hanging tip bears more fruit. Light irrigation should be given for 15 consecutive days.

Yield:
The fruit of the dragon tree usually lasts from 1 year to 1.5 years. Fruits are ready to be eaten in just 35-40 days after flowering. Its yield increases significantly every year. The older the tree, the higher the yield. Year after year its yield increases 3 to 4 times. Yield is usually 20 to 25 tons per hectare per year. Yield is very low in winter due to low light. If artificial lighting can be provided, good yields can be obtained even in winter.

Diseases and remedies:
Root rot – When water accumulates in the roots of the tree, the roots of the tree rot. After a while, the whole tree started to rot and the tree died. Therefore, while selecting the land, care should be taken that the land is slightly elevated, plenty of light is available and the drainage system is good.
Stem and root rot disease – This disease is caused by fungi or bacteria. The trunk of the tree first turns yellow and then black, and later that part begins to rot and the amount of rot increases. To control this disease any fungicide (Bevistin, Ridomil, Theovit etc.) can be easily solved by mixing 2 gm per liter of water.
Insect infestation – Insect infestation is not seen in this tree. However, some time has been seen spiders and aphids attack. It can be cured by using organic pesticides.

Income:
We have a huge demand for dragon fruit in Bangladesh. The wholesale price of dragon fruit is Tk 300 to Tk 500 per kg. Its value depends on the size of the fruit.
If you want, you can also cultivate dragon fruit in a small range in the roof garden.

Allah be with you.